বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৬ সালে লগি বৈঠার হিংস্র তান্ডবের কাছে সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। অনেক লড়াই সংগ্রামের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সেই হারানো পথ আবার ফিরে এসেছে। সাড়ে ১৫ বছরের বৈষম্য থেকে মুক্তি পেয়েছে দেশের মানুষ। ছাত্রজনতা যে বৈষম্যহীন মানবিক সমাজের জন্য লড়াই করেছে তাদের সেই উদ্যোশ্য যেন সফল হবে আশা করি। হতাহতদের রক্তের ঋণ এই জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবেন ।
রবিবার ( ১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরে শহরের সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জামায়াত ইসলামের কর্মী সম্মেলনে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াত ইসলামের সাবেক দুই শীর্ষ নেতার কথা স্মরণ করে তিনি আরো জানান, এই জেলা আমাদের বিশাল আবেগের জেলা। বিগত সরকার বিচারের নামে জামায়াত ইসলামের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনালের আব্দুল কাদের মোল্যা কে খুন করা করেছে। তারা দুনিয়ার আদালতসহ আল্লার কাছে এই খুনের বিচার দাবি করেন।
জামায়াতের আমীর অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সাল থেকে হাসিনা সরকার তাদের ক্ষমতাকে পাকাপক্ত করতে সেনাবাহিনী ও বিডিআর কে ধ্বংস করতে ২৫ ফেব্রুয়ারী বিডিআর বিদ্রোহের নামে বাংলাদেশ সেনাবাহীনির চৌকশ অফিসাদের হত্যা করেছে। তাদের পরিবার পরিজনসহ অনেক কে হত্যা করে লাশ ড্রেনের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। রাতের অন্ধকারে সেই খুনিদের সেভ যোনে পাঠানের ব্যবস্থা করা হয়। দেশবাসী সেই খুনিদের নাম প্রকাশসহ বিচার দেখতে চান বলে দাবী করা হয়।
বিগত ১৫ বছর নির্বাচনের নামে তামাশা করার কথা বলে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে মিথ্যা ভোটের জরিপ দেখা হয়েছে। দেশের জনগণের উপর আস্থা না থাকায় আওয়ামী সরকার ১৮ সালের নির্বাচন রাতেই করে ফেলেছে । বিশ্ব মিডিয়ায় যাকে মিড নাইট ইলেকশন বলে আখ্যা দিয়েছে বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। আর ২৪ এর নির্বাচন মামা-ভাগ্নের নির্বাচন উল্লেখ করে তামাশার নির্বাচনের কথা বলেন।
আগামী দিনে নির্বাচনের মাধ্যমে জামায়াত সরকার গঠন হলে তারা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, সেখানে গাছের উচু ডাল ও শিকরের মাঝে কোন ভেদাভেদ রাখবেন না। মেধার মাধ্যমে যোগ্য স্থানে সবাই বসতে পারবে। তাদের সরকার নারীর স্বাধীনতা রক্ষা করবেন, কাউকে জোর করে বোরখা পড়ানো হবে না। বরং মনের খুশিতে মর্যাদার প্রতীক হিসাবে কেউ পড়তে চাই পড়বেন ।
জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো: বদরউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা ও অঞ্চল টিমের সদস্য আবদুত তাওয়াব।
এসময় জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত জামায়াত ইসলামের নেতাকর্মীরা কর্মী সম্মেলনে অংশ নেয়।