অক্টোবর মাস জুড়ে বৃষ্টির কারণে এবছর ফরিদপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ পিছিয়ে গিয়েছে। চলতি মৌসুমে অক্টোবরের শুরুতেই পেঁয়াজ আবাদের মৌসুম, শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা অন্তত কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। গত কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না থাকায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদে ব্যস্ত সময় আর করছেন জেলার চাষীরা। তবে এবছর বীজ পেঁয়াজ ও উৎপাদন সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্য বেশি থাকায় মুড়ি কাটা পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। জেলার কৃষি বিভাগ বলছে মুড়ি কাটা পেঁয়াজ যত দ্রুত বাজারে আসবে তত দ্রুতই পেঁয়াজের উর্দ্ধমূল্যের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে।
সরেজমিনে গেলে ফরিদপুরের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কেউবা জমি প্রস্তুত করছেন আবার কেউ পেঁয়াজ রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে পরিদপুরে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়ি কাটা পেয়াজ আবাদের মাধ্যমে ৭২ হাজার পাঁচশ মেট্রিক টন পেয়াজ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কিন্তু এ বছর অক্টোবর মাসে জুড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের সময় পিছিয়ে গেলেও গত কয়েকদিন ধরে রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া পেয়েই দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পেঁয়াজ রোপনের কাজ শেষ করতে চান ফরিদপুরের কৃষকরা। তাই মুড়ি কাটা পেঁয়াজ রোপনের কর্মাদি সম্পন্ন করতে মরিয়া তারা।
মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদকারীরা জানান, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বীজ পেঁয়াজের দাম বেড়ে অন্তত দুই গুন হয়েছে। গতবছরের যে বীজ পেয়াজের মূল্য ছিল প্রতি মন চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা, তা এবছর ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এছাড়া পেঁয়াজ উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত স্যার ঔষধ সহ অন্যান্য পণ্যের ও মূল্য বেড়েছে বলে দাবি তাদের। আর এসব কারণে এবছর পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা। তাই মৌসুমে পেঁয়াজের মূল্য ভালো না থাকলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে দাবী করেন।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, আবাদ মৌসুম পিছিয়ে যাওয়ায় দ্রুততম সময়ে পেয়াজ রোপনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। কিছু দিনেই ১০ শতাংশ জমিতে পেয়াজ রোপন সম্পন্ন হয়েছে।
ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান জানান, ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বাজারে আসলে লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে পেঁয়াজের উর্দ্ধমূল্য।
তিনি আরো জানান, এ বছর জেলার নয়টি উপজেলায় ৪৩ হাজার দুইশ ৬০ হেক্টর জমিতে পেয়াজ আবাদ করে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার আটশ ৩৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।