সাতক্ষীরা-নাভারণ মহাসড়কের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল বাজার থেকে বেলতলা আমবাজার পর্যন্ত রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
বিশেষ করে তিন উপজেলার মানুষের একমাত্র বড় মোকাম বাগআঁচড়া বাজারের মেইন স্থান জিরো পয়েন্ট মোড়ের রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে যাওয়ার বাজারে আসা মানুষ ও ব্যবসায়ীরা বেশী সমস্যায় পড়েছেন।
দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষদের। সড়কটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, উক্ত সড়ক নির্মাণ কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করায় সড়কের অনেকস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানচলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রায়ই উক্ত সড়কে যানবাহন ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে বেহাল দশা বিরাজ করছে। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে পানি জমে গর্তগুলোতে কাদা, নর্দমা একাকার হয়ে সড়কটি যেনো পুকুরে পরিনত হয়।এতে প্রতিদিন ভ্যান উল্টে অনেকে আহত হচ্ছে। অনেক যাত্রীবাহী বাস মালবাহী ট্রাক গর্তে পড়ে বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
সড়ক বিভাগ মাঝে মাঝে ইট বালি দিয়ে গর্ত পুরণ করলে ও এখন যেন এ সড়কের দুরাবস্থা দেখার কেউ নেই..?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা থেকে যশোর জেলা সদরে সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক হিসেবে এই সড়কেই বেশি চলাচল করেন দু জেলার লাখ লাখ মানুষ। এমনকি যশোরের শার্শা ও সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকার প্রায় হাজার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসা এই সড়কটি। এসব এলাকা গুলো থেকে প্রায় ৩/৪ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন বাগআঁচড়া আফিল উদ্দীন ডিগ্রী কলেজ, মহিলা স্কুল এন্ড কলেজ,মশিউর রহমান মহিলা কলেজ ও বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে। কিন্তু বছর খানেক ধরে সড়কের বেশীর ভাগ অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে বিপাকে পড়েছেন স্কুল কলেজে পড়ূয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। গর্তগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে যেন পুকুরে পরিনত হয়ে যায়। সড়কটি খানা খনখন্দকের কারনে সড়কে দুর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অনেক প্রাণহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদেরকে। এ ছাড়া সড়কে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো সড়কের ভাঙ্গার কারনে একটি অপরটিকে ওভারট্যাক করতে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এর জন্য ওই সড়কে যানচলাচল আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে।
বাগআঁচড়া কলেজের একাদশ শেণ্রীর ছাত্রী তিশা খাতুন এ প্রতিবেদককে জানায়,“আমরা বাসা থেকে প্রায় ২/১কিঃমিঃ জায়গা পায়ে হেঠে কলেজে যাই। কারণ আমারদের চলাচলের প্রধান এই সড়কের এমন অবস্থা হয়েছে যে যেখানে যেতে ২০/৩০ মিনিটে কলেজে পৌছার কথা সেখানে লেগে যায় ১ ঘন্টারও বেশি সময়। সড়কের দশা বেহাল হওয়ায় আগের মতো এক গাড়ীতে দ্রুত যাওয়া যায়না তাই অপেক্ষা করে সময় নষ্ট না করে আমরা পায়ে হেটেই কলেজে যাচ্ছি। হেটে গিয়ে অনেকটা কান্ত হয়ে যাই যার কারনে ক্লাসে তেমন মনযোগ থাকেনা। বিশেষ করে চরম বিপাকে পড়তে হয় পরীক্ষার সময় কারণ পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হওয়া অনেক কষ্টসাধ্য। তাই যতাযত প্রদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।”
ভ্যানচালক আয়ুব আলী মুন্সি জানায়, জীবনের তাগিদে প্রতিদিন এ সড়কে ভাড়ায় ভ্যান চালাতে হয়। সড়কের অবস্থা এত খারাপ হওয়ায় প্রতিদিন যাত্রী নিয়ে ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এর মধ্যে এখন প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়, সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে খানা খন্দকে পানি জমে থাকে। এর ফলে মাঝে মাঝে ভ্যান উল্টে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।
বাগআঁচড়া বাজারে ঔষধ ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জানান,বাজারের মেইন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে তাতে পানি জমে পুকুরে পরিণত হয়েছে।রাস্তাটিতে যাতায়াতকারী গাড়ী গুলো বাজরের মধ্যে একে অন্যকে ওভারটেক করতে অনেক সময় লাগাচ্ছে এতে করে যানজটের সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। এতো যানযট হচ্ছে যে হঠ্যাৎ বৃষ্টি আসলে অনেক মোটরসাইকেল চালক ও আলগা ভ্যানগাড়ির যাত্রীদের ওখানে ভিজে যেতে হচ্ছে। অনেক সময় গর্তে পড়ে বিভিন্ন যানবাহন উল্টে অনেকে আহত হচ্ছে। বিকল হয়ে অনেক ভারী যানবহন ওখানে পড়ে থাকছে। তাই সড়কটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক জানান,বিষয়টি আমার জানাছিলোনা। এবং এ উপজেলায় আমি নতুন।আপনার মাধ্যমে জানলাম।রাস্তাটি পরিদর্শন করে অতিদ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।