ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের তামারহাজী জয়েনউদ্দীন মিনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ বছরই প্রথম ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
স্থানীয় একটি পক্ষের দাবী, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী পক্ষের ইশারায় প্রতি বছর তফসিল ঘোষনা করা হলেও নির্বাচনী কার্যক্রমের ফরম বিতরণ শুরু হওয়ার আগেই ঐক্য মতের সভা আহ্বান করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহনে আগ্রহীদের চাপে রেখে ফরম সংগ্রহ থেকে বিরত রাখা হতো। পরে ওই পক্ষের মনোনীত ব্যাক্তিদের দিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফরম সংগ্রহপূর্বক বিণা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে মনোনীত ব্যাক্তিকে সভাপতি নির্বাচন করানো হতো। ফলে বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়নি।
স্থানীয়দের দাবী , এবছরও যথারীতি গত ২০ জুন স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ৩ থেকে ৭ জুলাই। ২৩ জুলাই এ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
তারা জানান, এবছরও গত ১ জুলাই তামারহাজী, বিলতামারহাজী, আউটযুগ, মেগাডাঙ্গা, ও বাওড়কান্দী সহ ৫ গ্রামের মানুষকে বিগত দিনের ন্যায় আহ্ববান জানিয়ে ভোট গ্রহনে না গিয়ে সিলেকশন করা চেস্টা করা হলেও অধিকাংশ মানুষ বেঁকে বসেন। তারা ভোট গ্রহনের দাবীতে অনড় থাকেন। ফলে বাধ্য হয়েই জনতার দাবীর মুখে ভোট গ্রহনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।
ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম মিনা সুইট জানান, ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন না করে সিলেক্টেড করার লক্ষে এ সাধারণ মিটিং বাসানো হয়। তবে এ মিটিংয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। অত্র স্কুলে সভাপতি পদে দুই জন প্রার্থী প্রতিদন্দিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে অমিমাংশিতভাবে বৈঠক শেষ হয়।
সভাপতি পদপ্রার্থী শরীফ সাজ্জাদ হোসেন জুয়েল বলেন, পাঁচ গ্রামের লোকজন ডেকে নির্বাচনের আগে ০১ জুলাই মিটি য়ে সকলে সুন্দর ভাবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তবে আমি বক্তব্য দিতে গেলে নিশাদ মিনা নামের এক ব্যাক্তি আমার হাত থেকে মাইক্রোফোনটি কেড়ে নেয়। আমিও একজন সভাপতি প্রাথী , আমার কাছ থেকে ভরা মজলিসে অপর প্রার্থীর লোক মাইক্রোফোন কেড়ে নেয়া চরম একটা বেয়াদবি। তাই আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে এর জবাব দিবো।
অপর সভাপতি প্রত্যাশী ইমদাদ মিনা বলেন, বিনা ভোটে এ যাবতকাল ম্যানেজিং কমিটি ও সভাপতি নির্বাচিত করেছি। তাই এবারও আমরা বসে মিটিংয়ের মাধ্যমে কমিটি নির্ধারণ করেছিলাম। তবে সে প্রচেস্টা সফল হয়নি। তারপরেও আমরা আলাপ আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তে যাবো।
অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বালা বলেন, আমরা সোমবার বিকেলে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে স্কুলের নতুন কমিটি নির্বাচন ছাড়া সিলেক্টেড করার বিষয়ে বসেছিলাম। তবে এ বিষয় কোন সমাধান হয়নি। এখন আমরা বিধি মোতাবেক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাবো।
প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা তাপস শাঁখারী বলেন, ২০ জুন ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করা হয়। ৩ জুলাই থেকে মনোনয়ন দাখিল শুরু, এবং ৭ জুলাই মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়ন যাচাই বাছাই করে আগামী ২৩ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে কে কি করলো তা আমার জানা নেই। তবে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
উল্লেখ্য, এলাকার সুধী সমাজের দাবি , গত ১লা জুলাই মিটিংয়ে সভাপতি পদপ্রার্থী শরীফ সাজ্জাদ হোসেন জুয়েল এর মাইক্রোফোনটি কেড়ে নেয়া টা অন্যায় হয়েছে । তাকে এ ধরণের অসম্মান করার জন্য সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।