ঢাকা ১২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে ভাবীকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রাশিদা বেগমের (৩৭) নামে এক গৃহবধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ওই গৃহবধু সম্পর্কে কৃষকদল নেতার বড় ভাবী ছিলেন।
 মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন-অর রশীদ নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রবিবার দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর বাবা আবু সাইদ মোল্যা বাদি হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলার আসামীরা হলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রাম এলাকার মৃত. মোস্তফা মোল্যার ছেলে ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব নিহত গৃহবধুর দেবর আরব আলী (৩৮), গৃহবধুর স্বামী মো. আজগর হোসেন (৫০), দেবর আশরাফ আলী (৪৫) ও ননদ (আরব আলীর বোন) মর্জিনা বেগম (৫৫)। এ মামলার ২ নম্বর আসামি কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলী।
এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ বছর আগে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের বাসিন্দা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীর বড় ভাই সৌদি প্রবাসী আজগার হোসেনের সাথে একই উপজেলার কাতলাসুর গ্রামের বাসিন্দা আবু সাইদ মোল্যার মেয়ে রাশিদা বেগমের পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিবাহের পর থেকেই স্বামীর সংসারে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে থাকে গৃহবধূ রাশিদা বেগম। এমনকি স্বামী আজগার হোসেন প্রবাসে থাকলেও মোবাইলে তার পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনা দিয়ে গৃহবধূ রাশিদা বেগমের ওপর নির্যাতন চালাতো। বিষয়টি নিয়ে বহুবার স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবে শালিস বৈঠক হলেও দিনে দিনে গৃহবধুর উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে গৃহবধূ রাশিদা বেগম নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে দেবর আরব আলীর বসতঘরে সকলের অজান্তে ঘাস মারা বিষ পান করে। গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে পরেরদিন সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে একদিন চিকিৎসার পর গৃহবধূ রাশিদা বেগমের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ ডিসেম্বর দুপুরে তিনি মারা যান। রাশিদা-আজগার দম্পতির সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে আসামীরা গাঁ-ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
 তবে এ ব্যাপারে  উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক হাদী জিয়া জানান, শুনেছি উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এজন্য তার মোবাইল বন্ধ থাকতে পারে। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের  আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর রশীদ জানান, গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদারীপুর থেকে চুরি হওয়া গরু ফরিদপুরে জনতার হাতে চোর সহ আটক

ফরিদপুরে ভাবীকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় ০২:২১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রাশিদা বেগমের (৩৭) নামে এক গৃহবধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ওই গৃহবধু সম্পর্কে কৃষকদল নেতার বড় ভাবী ছিলেন।
 মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন-অর রশীদ নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রবিবার দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর বাবা আবু সাইদ মোল্যা বাদি হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলার আসামীরা হলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রাম এলাকার মৃত. মোস্তফা মোল্যার ছেলে ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব নিহত গৃহবধুর দেবর আরব আলী (৩৮), গৃহবধুর স্বামী মো. আজগর হোসেন (৫০), দেবর আশরাফ আলী (৪৫) ও ননদ (আরব আলীর বোন) মর্জিনা বেগম (৫৫)। এ মামলার ২ নম্বর আসামি কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলী।
এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ বছর আগে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের বাসিন্দা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীর বড় ভাই সৌদি প্রবাসী আজগার হোসেনের সাথে একই উপজেলার কাতলাসুর গ্রামের বাসিন্দা আবু সাইদ মোল্যার মেয়ে রাশিদা বেগমের পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিবাহের পর থেকেই স্বামীর সংসারে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে থাকে গৃহবধূ রাশিদা বেগম। এমনকি স্বামী আজগার হোসেন প্রবাসে থাকলেও মোবাইলে তার পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনা দিয়ে গৃহবধূ রাশিদা বেগমের ওপর নির্যাতন চালাতো। বিষয়টি নিয়ে বহুবার স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবে শালিস বৈঠক হলেও দিনে দিনে গৃহবধুর উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে গৃহবধূ রাশিদা বেগম নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে দেবর আরব আলীর বসতঘরে সকলের অজান্তে ঘাস মারা বিষ পান করে। গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে পরেরদিন সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে একদিন চিকিৎসার পর গৃহবধূ রাশিদা বেগমের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ ডিসেম্বর দুপুরে তিনি মারা যান। রাশিদা-আজগার দম্পতির সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে আসামীরা গাঁ-ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আরব আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
 তবে এ ব্যাপারে  উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক হাদী জিয়া জানান, শুনেছি উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এজন্য তার মোবাইল বন্ধ থাকতে পারে। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের  আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর রশীদ জানান, গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।