ঢাকা ১১:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে  প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা প্রতারক চক্র 

মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা দিলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন এক লক্ষ টাকা আর তা পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছর ধরে। এমন নানা স্কিমে প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে একটি এনজিও।  বৃহস্পতিবার ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার ( ১৫ ই অক্টোবর)  দুপুরের পর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।  অফিসের বড় পদের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা গোপনে চলে গেলেও নিচু পদের দুই কর্মীকে আটকে রাখে গ্রাহকরা৷ খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, মাত্র এক মাস আগে ফরিদপুর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের রঘুনন্দনপুরে ফরিদপুর হাউজিং স্টেটে ছায়াবীথি-মমতা ভবনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে “প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা” নামে একটি বেসরকারি সংস্থা(এনজিও) পরিচয়ে কার্যক্রম শুরু করে। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে সদস্য সংগ্রহ করে।  এ সময় তারা ৫০০০ টাকা জমা দিলে এক লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান এবং তা দুই বছরে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদানসহ নানা প্রলোভন দেখায়।
তাদের চটকদার প্রলোভনে পড়ে অনেকেই বিশ্বাস করে টাকা জমা দেন। গত এক মাস ধরে তারা হাবেলি গোপালপুর, গোয়ালচামচ, রঘুনন্দনপুর সহ বিভিন্ন স্থানে সমিতি গঠন করে ঋণ প্রদানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ই অক্টোবর)  তাদের ঋণ দেবার কথা জানান। কিন্তু তার দুদিন আগে মঙ্গলবার দুপুরেই অফিস ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
ঋণ পাবার আশায় অনেকেই ধার দেনা করেও টাকা দিয়েছেন তাদের। কিন্তু টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছে ওই সমস্ত পরিবার। এ ঘটনায় তারা সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।
আটকে রাখা দুই কর্মচারীর জানান, বড় পদের কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার পরে নিম্ন পদস্থ দুই কর্মচারীকে আটকে রাখা হয়। যদিও আটকে থাকা ওই কর্মচারীরা জানান তারাও ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রতারিত।  নানা প্রলোভনে তাদেরকে চাকরি দিয়েও হাতিয়ে নেয়া হয়েছে টাকা। তারা টাকা হাতিয়ে নেয়ার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করছেন।
ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফ জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিবাগত  আটটার দিকে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার ব্যক্তিদের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা।
ওই প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৪/১৯৯৮ইং লেখা থাকলেও সেটি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই।
 ভুক্তভোগী  মোছাঃ কামরুন্নাহার ওরফে রোজি জানান, প্রতারক চক্র আগামী বৃহস্পতিবার ঋন দেবার কথা বলে লোন দেবার কথা বলে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তিন জনের নাম উল্লেখসহ বেশকয়েক কে আসামী করে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হয়। এছাড়াও ঋন গ্রহন বাবদ অগ্রিম ১০% টাকা গ্রহন করে। এদের মধ্যে আফরোজা বেগমের ৩০ হাজার ৬শ টাকা, নুরুন্নাহারের নিকট থেকে ২০ হাজার ৬শ টাকা, রুবিনা বেগম কে ৭ লাখ টাকা ঋন দেবার কথা বলে ৭০ হাজারসহ  সমিতির অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে বহু টাকা আত্মসাৎ করে এই চক্রটি। প্রত্যাশা সমাজ কল্যান সংস্থার চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল আকতার, ম্যানেজার মোঃ আরিফুল ইসলাম, সিনিয়র মাঠ কর্মী ফেরদৌস আরানহ ঐ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারী এই প্রতারনার সাথে জড়িত বলে থানায় অভিযোগ করা হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি ভুক্তভোগীদের।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুরে বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু 

ফরিদপুরে  প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা প্রতারক চক্র 

আপডেট সময় ০২:৫১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা দিলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন এক লক্ষ টাকা আর তা পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছর ধরে। এমন নানা স্কিমে প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে একটি এনজিও।  বৃহস্পতিবার ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার ( ১৫ ই অক্টোবর)  দুপুরের পর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।  অফিসের বড় পদের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা গোপনে চলে গেলেও নিচু পদের দুই কর্মীকে আটকে রাখে গ্রাহকরা৷ খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, মাত্র এক মাস আগে ফরিদপুর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের রঘুনন্দনপুরে ফরিদপুর হাউজিং স্টেটে ছায়াবীথি-মমতা ভবনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে “প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা” নামে একটি বেসরকারি সংস্থা(এনজিও) পরিচয়ে কার্যক্রম শুরু করে। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে সদস্য সংগ্রহ করে।  এ সময় তারা ৫০০০ টাকা জমা দিলে এক লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান এবং তা দুই বছরে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদানসহ নানা প্রলোভন দেখায়।
তাদের চটকদার প্রলোভনে পড়ে অনেকেই বিশ্বাস করে টাকা জমা দেন। গত এক মাস ধরে তারা হাবেলি গোপালপুর, গোয়ালচামচ, রঘুনন্দনপুর সহ বিভিন্ন স্থানে সমিতি গঠন করে ঋণ প্রদানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ই অক্টোবর)  তাদের ঋণ দেবার কথা জানান। কিন্তু তার দুদিন আগে মঙ্গলবার দুপুরেই অফিস ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
ঋণ পাবার আশায় অনেকেই ধার দেনা করেও টাকা দিয়েছেন তাদের। কিন্তু টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছে ওই সমস্ত পরিবার। এ ঘটনায় তারা সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।
আটকে রাখা দুই কর্মচারীর জানান, বড় পদের কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার পরে নিম্ন পদস্থ দুই কর্মচারীকে আটকে রাখা হয়। যদিও আটকে থাকা ওই কর্মচারীরা জানান তারাও ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রতারিত।  নানা প্রলোভনে তাদেরকে চাকরি দিয়েও হাতিয়ে নেয়া হয়েছে টাকা। তারা টাকা হাতিয়ে নেয়ার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করছেন।
ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফ জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিবাগত  আটটার দিকে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার ব্যক্তিদের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা।
ওই প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৪/১৯৯৮ইং লেখা থাকলেও সেটি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই।
 ভুক্তভোগী  মোছাঃ কামরুন্নাহার ওরফে রোজি জানান, প্রতারক চক্র আগামী বৃহস্পতিবার ঋন দেবার কথা বলে লোন দেবার কথা বলে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তিন জনের নাম উল্লেখসহ বেশকয়েক কে আসামী করে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হয়। এছাড়াও ঋন গ্রহন বাবদ অগ্রিম ১০% টাকা গ্রহন করে। এদের মধ্যে আফরোজা বেগমের ৩০ হাজার ৬শ টাকা, নুরুন্নাহারের নিকট থেকে ২০ হাজার ৬শ টাকা, রুবিনা বেগম কে ৭ লাখ টাকা ঋন দেবার কথা বলে ৭০ হাজারসহ  সমিতির অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে বহু টাকা আত্মসাৎ করে এই চক্রটি। প্রত্যাশা সমাজ কল্যান সংস্থার চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল আকতার, ম্যানেজার মোঃ আরিফুল ইসলাম, সিনিয়র মাঠ কর্মী ফেরদৌস আরানহ ঐ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারী এই প্রতারনার সাথে জড়িত বলে থানায় অভিযোগ করা হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি ভুক্তভোগীদের।