চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার ঘুষ ছাড়া বিলে স্বাক্ষর করেনা। যারা টাকা দিবে তারাই চেক পাবে এমন নীতিতে কাজ করেন তিনি। সরকারি সকল প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ১২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে পছন্দের লোকদের সাথে চুক্তি করে প্রতিটি বরাদ্দে নিজে ৫/১০ টি প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত গ্রামাঞ্চলের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশানঘাট, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট স্থাপন, মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগ তছরুপ করা হয় তার মাধ্যমে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে এগিয়ে আছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সরকারি কমকর্তা ও কর্মচারীরা। তার বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এই উপজেলায়।
উপজেলা ভিত্তিক ও সংসদ সদস্যদের অনুকূলে তৃণমূলের উন্নয়ন ও দরিদ্রদের সহায়ক হিসেবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার নানা শিরোনামে উপজেলায় উন্নয়নের জন্য ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ হয়। এছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আওতায় বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে অর্থ, সাধারণ ও বিশেষ নামে বরাদ্দ আসে। একই ভাবে বরাদ্দ হয় প্রত্যেক সংসদ সদস্যের অনুকূলে। উপজেলার অনুকূলে বরাদ্দ অর্থ সমন্বয় কমিটির সভার মাধ্যমে বণ্টন হয় বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে। যা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকে ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা। তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি থাকলেও দেখভালের দায়িত্বে থাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার।
কিন্তু ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিজের একক আধিপত্যের কারণে সহকারী প্রকৌশলী ও ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট কে বাদ দিয়ে সকল প্রকল্পসমূহ দেখভাল করেন মিল্টন। এমতাবস্থায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার দ্রুত অপসারণ চেয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার দু’ তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপকারভোগী আওয়ামী পন্থী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা জানান, বর্তমানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার ঘুষ নেওয়া থেকে উপজেলার কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নেতাকর্মীরা ছাড় পায় না। তিনি কাজ না হলেও সমন্বয়ের মাধ্যমে বিল প্রদান করে থাকে। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বরাদ্দের সময় দলীয় নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে নিজের পছন্দ মতো প্রকল্প সভাপতি বানিয়ে অর্থ আত্মসাত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার বলেন, আমার বিরোদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন এসব মিথ্যা। এবং তার সাথে বিস্তারিত কথা বলতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে চলে যান।