ঢাকা ০৩:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মামলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

ফরিদপুরের সালথায় মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে উল্টো মো. সুমিনুর রহমান (৩২) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। মো. সুমিনুর রহমান ফরিদপুরের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মামলায় তার সাবেক বডিগার্ড পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেনকেও (৩৫) আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুল হাসান লাবলু জানান, বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মো. মারুফ হুসাইন বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে মামলাটিকে মিথ্যা ও হয়রনিমূলক অভিহিত করে পুলিশ কর্মকর্তা মো. সুমিনুর রহমান জানান, তাকে কিছুদিন আগে থেকেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তার পদকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে ওই নেতা আমার বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছে।
তবে এ দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. কামরুল ইসলাম জানান, আমি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে কেন চাঁদা দাবি করবো? সে অভিযোগ করতেই পারে, তবে যে পুলিশ কর্মকর্তা চাঁদা দাবির কথা বলছেন তখন তিনি জাপানে পড়ালেখার জন্য গিয়েছিলেন। এছাড়া মামলা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য এ অভিযোগ করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন খান মিঠু জানান, ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে যে কেউ মামলা করতেই পারে। তবে দলীয় পরিচয়ে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে এ রকম সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘আমি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম। ২০২২ সালের মার্চ মাসে আসামি নগরকান্দার সাবেক সার্কেল এএসপি সুমিনুর রহমান আমাকে ফোন করে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ভালই করে অনেক টাকা পয়সা কামাইছো। বিএনপি দল করে শান্তিতে থাকতে হলে আমাকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, নইলে একরাতও বাড়িতে ঘুমাতে দেব না। আমি তার দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি আমাকে হেনস্তা ও আর্থিকভাবে ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।’
মামলার বিষয় ফরিদপুরের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, সালথার ইজিবাইকচালক আলী মাতুব্বর হত্যার ঘটনা তদন্তে কামরুল আসামি হিসেবে সনাক্ত হয়। ওই মামলাটি এখনো পিবিআই তদন্ত করছে। ওই হত্যা মামলায় কামরুল আসামি হওয়ায় আমার উপর তিনি ক্ষিপ্ত হন। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি সুবিধা নেওয়ার জন্য এই নাটক সাজিয়েছেন।
চাঁদা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উল্টো আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেছেন ওই নেতা। চাঁদা না পেয়ে উল্টো হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আলিফ পরিবহন খাদে : আহত-৩০

ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মামলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

আপডেট সময় ০২:৩৯:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
ফরিদপুরের সালথায় মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে উল্টো মো. সুমিনুর রহমান (৩২) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। মো. সুমিনুর রহমান ফরিদপুরের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মামলায় তার সাবেক বডিগার্ড পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেনকেও (৩৫) আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুল হাসান লাবলু জানান, বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মো. মারুফ হুসাইন বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে মামলাটিকে মিথ্যা ও হয়রনিমূলক অভিহিত করে পুলিশ কর্মকর্তা মো. সুমিনুর রহমান জানান, তাকে কিছুদিন আগে থেকেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তার পদকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে ওই নেতা আমার বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছে।
তবে এ দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. কামরুল ইসলাম জানান, আমি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে কেন চাঁদা দাবি করবো? সে অভিযোগ করতেই পারে, তবে যে পুলিশ কর্মকর্তা চাঁদা দাবির কথা বলছেন তখন তিনি জাপানে পড়ালেখার জন্য গিয়েছিলেন। এছাড়া মামলা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য এ অভিযোগ করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন খান মিঠু জানান, ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে যে কেউ মামলা করতেই পারে। তবে দলীয় পরিচয়ে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে এ রকম সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘আমি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম। ২০২২ সালের মার্চ মাসে আসামি নগরকান্দার সাবেক সার্কেল এএসপি সুমিনুর রহমান আমাকে ফোন করে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ভালই করে অনেক টাকা পয়সা কামাইছো। বিএনপি দল করে শান্তিতে থাকতে হলে আমাকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, নইলে একরাতও বাড়িতে ঘুমাতে দেব না। আমি তার দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি আমাকে হেনস্তা ও আর্থিকভাবে ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।’
মামলার বিষয় ফরিদপুরের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, সালথার ইজিবাইকচালক আলী মাতুব্বর হত্যার ঘটনা তদন্তে কামরুল আসামি হিসেবে সনাক্ত হয়। ওই মামলাটি এখনো পিবিআই তদন্ত করছে। ওই হত্যা মামলায় কামরুল আসামি হওয়ায় আমার উপর তিনি ক্ষিপ্ত হন। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি সুবিধা নেওয়ার জন্য এই নাটক সাজিয়েছেন।
চাঁদা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উল্টো আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেছেন ওই নেতা। চাঁদা না পেয়ে উল্টো হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন।