নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার জালশুকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ম্যাগজিনসহ একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী।
এসময় অস্ত্র লুটে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটকরা হলেন- জেলার পূর্বধলা উপজেলার জামাইকোণা গ্রামের মৃত হাজী তালেব আলী সরকারের ছেলে মো. আতাউর রহমান (৩৯), জালশুকা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৩), গোহালাকান্দা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে মো. সাব্বির হোসেন খান (১৮), মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (২৫), এবং ময়মনংসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মহিলাকান্দা গ্রামের
নাম ছোটন সরকারের স্ত্রী মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬)।
আজ শনিবার নেত্রকোণা সেনা ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার জালশুকা কুমুদগঞ্জ জামে মসজিদ এর ভিতর থেকে শপিং ব্যাগে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় পিস্তল ও একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জেলা পুলিশের ১০টি নাইন এমএম পিস্তল, ২৬ টি ম্যাগাজিন, ৪২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও ৩২টি টিয়ার শেল পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে লুট হয়।
এ নিয়ে লুট হওয়া ১০টি অস্ত্রের মধ্যে ৯টি উদ্ধার করা হলো।
এছাড়া একটি অস্ত্রের ভাঙা অবস্থায় অর্ধেক অংশ পূর্বধলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করানো হয়েছে।
লুট হওয়া অস্ত্র, অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী।
নেত্রকোণা সেনা ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার জানান, এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নেত্রকোণা সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজিদ বিন রওশনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করেন পূর্বধলা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ এম এন আকিব। এ সময় জেলা প্রশাসন থেকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীত সরকার।
মেজর জিসানুল হায়দার আরও জানান, এ ঘটনায় লুটকৃত অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব এবং আনসার সদস্যের সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৫ পূর্বধলা থানাধীন শ্যামগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযান চলে। এতে সেখানে ব্যাপক জনমত এবং সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলশ্রুতিতে গতকাল শুক্রবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয়দের সহায়তায় জালশুকা কুমুদগঞ্জ জামে মসজিদের ভেতরে পাওয়া এক শপিং ব্যাগে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি নাইন এম এম পিস্তল এবং একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনা সদস্যরা। অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, গতকাল মোট দুইটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একটি সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার হয়েছে। আরেকটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলা উপজেলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। সেখানে একটি অস্ত্রের অর্ধেক অংশ পাওয়া গেছে। বাকি অর্ধেক অংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।