বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর এখনো থানা পুলিশের কাজে যোগ না দেয়ায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দাদের মাঝে ডাকাত আতঙ্কে চরম নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা সমাবেশ,মতবিনিময় ব্যক্তিগত প্রহরার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ৯ আগষ্ট শুক্রবার সকালে উপজেলা হলরুমে সর্বদলীয় সভায় সভাপতিত্ব করেন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল।
এতে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক বিজিএমইএ’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও গাউছিয়া কর্পোরেশনের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন আকন্দ, সাধারণ সম্পাদক বাশির উদ্দিন বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি আনোয়ার ছাতাদ সায়েম, আশরাফুল হক রিপন, জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইন বিষয়ক সভাপতি এ্যাডভোকেট ইস্রাফিল হোসেন, ইসলামী আন্দোলন রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি ইমদাদুল্লাহ হাশেমী, রূপগঞ্জ থানা যুবদল নেতা আবু মোহাম্মদ মাসুম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, ইমাম ও খতিব, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, হেফাজতে ইসলাম উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়াদের প্রতিনিধি,সর্বদলীয় থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ।
এর আগে, রূপগঞ্জবাসির নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসন, বণিক সমিতি সাংবাদিক,ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়াদের প্রতিনিধি, হিন্দু খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে সভা ও উঠান বৈঠক করে তাদের নিরাপত্তাদানে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপি ও সহযোগী নেতারা।
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, রূপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে তথ্য ও পরামর্শ গ্রহণ করেছি।শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজাতে কাজ করেছি।কিন্তু ছাত্রলীগের একটি অস্ত্রধারী গ্রুপ উল্লাসের নামে রাতের আধারে দু এক স্থানে ভাংচুর করেছে। এরা কেউ বিএনপির নয়। একদল টোকাই ও মাদকসেবী নিজেকে বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্মে জড়িয়েছে। তাদের ধরে আইনের হাতে তুলে দিন। ছাত্রদের মতো সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ছাত্রদের চেতনা, আত্নত্যাগকে ম্লান করে দিতে বিএনপি পরিচয়ে যে কেউ কোন অরাজকতা করলে তাকে আটক করে আইনের হাতে তুলে দিন। আমরা রূপগঞ্জের সবাই মিলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে চাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন রূপগঞ্জবাসিকে আশ্বস্ত করে বলেন, রূপগঞ্জের পাড়া মহল্লায় বিএনপির লোকজন নিরাপত্তায় কাজ করবে। এর ব্যতিক্রম কেউ করলে প্রমাণসহ দিন,তাকে বহিষ্কার করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, জনগণের জান মালের নিরাপত্তায় বর্তমানে সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতাসহ সেনাবাহীনির টহল রয়েছে। আজ থেকে পুলিশ তাদের কর্মে ফিরলে সব ধরনের নিরাপত্তা বহাল থাকবে। যারা হামলা করেছে,লুট করেছে তাদের তালিকা হচ্ছে। আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদক ও কিশোরগ্যাং দমনে কাজ করছি। রাজনৈতিক নেতারা সহযোগীতা করলে সফলতা আসবে।
এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার সভায় তাদের পরামর্শ ও সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। পরে নিহত ছাত্রদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মুনাজাত করা হয়।