রাঙ্গুনিয়ার রাজানগরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা ও কুপিয়ে জখম করে উল্টো আহতদের বিরুদ্ধে হামলাকারীরা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ১নং রাজানগর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বগাবিলি গ্রামে ৮ জুন এ ঘটনা ঘটলেও গত দুই দিন ধরে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা যায়, বগাবিলি গ্রামের নুরুজ্জামা মেম্বারের বাড়ীর সৈয়দ আহমদ ও নুর হোসেন মাস্টারের ছেলে আবদুল মাবুদ ও আসিফের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বসত ভিটার জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। নুর হোসেনের বসত ঘরের উঠোনের ৪ শতক জায়গা আদলতের রায়ে সৈয়দ আহমদ প্রাপ্ত হন, এবং ২শতক জায়গা দখলে স্থিত আছেন। বাকি ২ শতক জায়গা থেকে নুর হোসেন গং ১ শতক জায়গা ছেড়ে দিয়ে ঘর থেকে যাতায়াতের জন্য ১ শতক দখলে রাখেন। সে ১ শতক জায়গার পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী জায়গা থেকে ২ শতক জায়গা সৈয়দ আহমদকে দিতে রাজি হন নুর হোসেন গং। এই বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি চেয়ারম্যানের অফিসে বেশ কয়েকবার বৈঠকেও বসে। কিন্তু বিচারিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গোপনে নুর হোসেন গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে বাদী সৈয়দ আহমদ গং। এরপরই আবার ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলাচলের পথ বন্ধ করতে ঘেরা ভেড়া দিতে চাইলে চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তা বাতিল হয়।
এদিকে গত ৭ জুন রাতে হঠাৎ সৈয়দ আহমদের পুত্রবধু খতিজা আক্তার বাচু পার্শ্ববর্তী পরিবার হাসমত আলীর ঘরে গিয়ে তার দুই ছেলে মুবিন ও ইমনকে ডেকে ঘর থেকে বের করেন। এবং তার বসত ঘরের টিনের চালে ঢিল ছুঁড়ে মারার অভিযোগ তুলে কারণ জানতে চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আগ থেকে ওৎপেতে থাকা সৈয়দ আহমদের ছেলে খালেক, মাসুদের নেতৃত্বে মিনহাজ ও শীর্ষ সন্ত্রাসী হোসেন মুবিন ও ইমনের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় চালায়। এসময় ছেলেকে বাঁচাতে বাবা হাসমত আলী ও তার স্ত্রী ছুটে এলে, তাদেরকেও ধারালো কিরিচ দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। উল্লেখ্য, হামলার পরদিনই উল্টো তারাসহ পূর্ব জায়াগা সংক্রান্ত জেরের নুর হোসেনের পুত্র আবদুল মাবুদ, ওসমান গণি আসিফ, নজরুল ইসলাম ও ফয়সালকে জড়িয়ে ৭/৮ বিরুদ্ধে রাঙ্গুনিয়া থানায় মিথ্যা অভিযোগ ঠুকে দিয়েছে হামলাকারীরা।
অন্যদিকে এঘটনায় আহত হাসমত আলী বাদী হয়ে গত ৯ জুন অভিযুক্ত খতিজা আক্তার বাচু, আবদুল খালেক, মাসুদ, মিনহাজ হোসেনসহ সৈয়দ আহমদ গংয়ের বিরুদ্ধে রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে আবদুল মাবুদ বলেন, আমাদের জায়গা সংক্রান্ত জের ধরে সৈয়দ আহমদের পুত্রবধুর খতিজা আক্তার চক্রান্ত করে চাচা হাসমত আলী পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে মুবিন, ইমনকে কুপিয়ে জখম করেছে। উল্টো আবার হামলাকারীরা আমাকে ও আমার ভাইসহ ৭/৮ জনের নাম জড়িয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে। মূলতঃ সৈয়দ আহমদ গং আমাদেরকে হয়রানির জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার চাই।
এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, উভয়পক্ষ থানায় অভিযোগ করেছেন, আমরা একজন এসআইকে তদন্তের ভার দিয়েছি। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করছেন। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা মিলবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে।