ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোণায় আদালতের রায়ে ইউপি চেয়ারম্যান জেল হাজতে 

জমি দখল, হামলা ও মারধরের মামলায় নেত্রকোণার এক ইউপি চেয়ারম্যানকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
তিনি কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আনিছুর রহমান পাঠান ওরফে বাবুল পাঠান।
এ ঘটনায় আরো পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতক মঙ্গলবার নেত্রকোণা জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এর বিচারক রিমি সাহা এই রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পাঠানকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড, তাঁর ছেলে হৃদয় পাঠানকে দেড় বছর, ভাতিজা সাইদুল পাঠানকে দেড় বছর ও জিল্লুর পাঠানকে ১৫ মাস, চাচাতো ভাই মাসুম পাঠানকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানসহ চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি মাসুম পাঠান পলাতক আছেন।
স্হানীয় এলাকাবাসী ও  মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন  ৪৬ শতক জায়গা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান পাঠানের সঙ্গে রংছাতি গ্রামের বাসিন্দা খুশিকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলীর দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। ইউনুস আলী ওই জায়গায় দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান ও তার লোকজন জমিটি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি ও ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা চালায়।
মামলাটি করার আগে ২০২২ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর ইউনুস আলী কলমাকান্দা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর তার লোকজন নিয়ে জায়গাটি দখলের উদ্দেশ্যে ইউনুছ আলীর লাগানো গাছে চারাগুলো কেঁটে ফেলে। এ ঘটনার পরের দিন এশিয়ান টিভিসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদটি প্রচার হয়।
সংবাদ প্রচারের পর ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে  একই বছরের ৫ অক্টোবর তার লোকজন  নিয়ে ইউনুস আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙচুর, লুটপাটসহ মারধর করেন। এতে ইউনুস আলী, তাঁর চাচাতো ভাই মামুনুর রশিদ ও আতাউর রহমান আহত হন।
পরে ওই দিনই ইউনুস আলীর স্ত্রী আসমা আক্তার বাদী হয়ে আনিছুর রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এক আসামি সম্প্রতি মারা গেছেনে। গতকাল মঙ্গলবার আদালত ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
ইউনুস আলী বলেন, ‘ওই জায়গাটি দীর্ঘদিন আগে সাফ কবলা দলিল মূলে আমি একজনের কাছ থেকে ক্রয় করি। আমার ভোগদখলে থাকা জায়গা দখল করতে চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে হামলা করেন, লুটপাট ও ভাঙচুর চালান এবং আমাদের পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে আমরা সুবিচার পেয়েছি।’
নেত্রকোণা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জাফর ইকবাল বলেন, আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য আসামিদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেরপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী-পুলিশ সংঘর্ষ : পুলিশের গুলি, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত ২০

নেত্রকোণায় আদালতের রায়ে ইউপি চেয়ারম্যান জেল হাজতে 

আপডেট সময় ১২:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪
জমি দখল, হামলা ও মারধরের মামলায় নেত্রকোণার এক ইউপি চেয়ারম্যানকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
তিনি কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আনিছুর রহমান পাঠান ওরফে বাবুল পাঠান।
এ ঘটনায় আরো পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতক মঙ্গলবার নেত্রকোণা জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এর বিচারক রিমি সাহা এই রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পাঠানকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড, তাঁর ছেলে হৃদয় পাঠানকে দেড় বছর, ভাতিজা সাইদুল পাঠানকে দেড় বছর ও জিল্লুর পাঠানকে ১৫ মাস, চাচাতো ভাই মাসুম পাঠানকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানসহ চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি মাসুম পাঠান পলাতক আছেন।
স্হানীয় এলাকাবাসী ও  মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন  ৪৬ শতক জায়গা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান পাঠানের সঙ্গে রংছাতি গ্রামের বাসিন্দা খুশিকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলীর দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। ইউনুস আলী ওই জায়গায় দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান ও তার লোকজন জমিটি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি ও ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা চালায়।
মামলাটি করার আগে ২০২২ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর ইউনুস আলী কলমাকান্দা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর তার লোকজন নিয়ে জায়গাটি দখলের উদ্দেশ্যে ইউনুছ আলীর লাগানো গাছে চারাগুলো কেঁটে ফেলে। এ ঘটনার পরের দিন এশিয়ান টিভিসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদটি প্রচার হয়।
সংবাদ প্রচারের পর ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে  একই বছরের ৫ অক্টোবর তার লোকজন  নিয়ে ইউনুস আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙচুর, লুটপাটসহ মারধর করেন। এতে ইউনুস আলী, তাঁর চাচাতো ভাই মামুনুর রশিদ ও আতাউর রহমান আহত হন।
পরে ওই দিনই ইউনুস আলীর স্ত্রী আসমা আক্তার বাদী হয়ে আনিছুর রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এক আসামি সম্প্রতি মারা গেছেনে। গতকাল মঙ্গলবার আদালত ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
ইউনুস আলী বলেন, ‘ওই জায়গাটি দীর্ঘদিন আগে সাফ কবলা দলিল মূলে আমি একজনের কাছ থেকে ক্রয় করি। আমার ভোগদখলে থাকা জায়গা দখল করতে চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে হামলা করেন, লুটপাট ও ভাঙচুর চালান এবং আমাদের পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে আমরা সুবিচার পেয়েছি।’
নেত্রকোণা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জাফর ইকবাল বলেন, আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য আসামিদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।