রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আমোদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার শর্তে অর্থ নিয়েও চাকরি না দেয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মিলন হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী। সে উপজেলার এক নম্বর বাজু বাঘা ইউপির আমোদপুর গ্রামের মৃত: পলান সর্দারের ছেলে। চাকুরী না দিয়ে টাকা ফেরত প্রদানে টালবাহানা করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও সভাপতি আলী হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার (২১ মে) চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত -রাজশাহীতে দ:বি: ৪০৬/৪২০ধারায় উক্ত মামলা দায়ের করা হয় (৩৮)। বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মিলন হোসেনের স্ত্রী শিল্পি খাতুন কে আমোদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আয়া পদে চাকুরী দেয়ার শর্তে গত ০৯ জুলাই(২০২৩)
৪,০০,০০০/- (চার লক্ষ) টাকা নেয় প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী হোসেন।
পরে অত্যন্ত গোপনে গত ১৬ ডিসেম্বর-২০২৩ আয়াসহ ৪টি পদে লোক নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সুকৌশলে গোপন রাখায় বাদীর স্ত্রী শিল্পি খাতুন আবেদন করতে পারে নি। নিয়োগ হয়ে গেছে এমন সংবাদে বাদি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নিকট টাকা ফেরত চাই । অভিযুক্তরা টাকা ফেরত না দিয়ে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকে। অবশেষে গত ১৮ মে (২০২৪) টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অস্বীকার করে বলেন, কোন টাকা দিতে পারব না পারলে আদায় করে নিস। এরপর বাদি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দাখিল করেন। ইউপি চেয়ারম্যান আইনজীবী ফিরোজ আহমেদ রঞ্জু বিবাদীদের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললেও তারা কোন কর্ণপাত করেননি।
মামলার বাদী মিলন হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি আমার বাপ চাচার দানকৃত জমিতে অবস্থিত। বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগ হবে জানিয়ে আমার স্ত্রী শাপলা খাতুনকে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। তবে চাকরি পেতে হলে সাত লক্ষ টাকা অনুদান লাগবে জানান তারা। এই শর্তে গত ৭জুলাই(২০২৩) নিজ বাড়িতে নগদ চায় লক্ষ টাকা প্রদান করি।
পরে আমার স্ত্রীকে চাকরি না দিয়ে বেশি টাকার লোভে অন্য আরেকটা মেয়েকে আয়া পথে চাকরি দিয়েছে। আমার টাকা আমি ফেরত চাইলে
তারা টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
বাদী আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক সভাপতির কথা সরল ভাবে বিশ্বাস করে আমি আমার গরু-ছাগলসহ জমি বিক্রি করে বিদ্যালয়ের আয়া পদে চাকরি দেওয়ার শর্তে ৪ লাখ টাকা দিয়েছি। এখন আমি সর্বস্বান্ত। প্রশাসনের কাছে আমি এর সুবিচার চাই।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির এ্যাডভোকেট এ,কে,এম মাসুদ-উল হক ও বাজুবাঘা ইউপি চেয়ারম্যান আইনজীবী ফিরোজ আহমেদ রঞ্জু জানান, আমোদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্ত্রীকে আয়া পদে নিয়োগের শর্তে বাদী মিলন হোসেন বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে ৪ লাখ টাকা দিয়েছিল। ওই নিয়োগে মিলন হোসেনের স্ত্রীর চাকরি হয় নাই। । পরবর্তীতে মিলন হোসেন টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করে বিধায় সে দুই জনের নামে এই মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কলটি রিসিভ না হওয়ার তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।