সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্যোগটি সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই স্কিমের সদস্য হলে ভবিষ্যতে আর কারও উপর নির্ভরশীল হতে হবে না। যে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা যতটা সুরক্ষিত সে দেশের মাপকাঠি ততটা উন্নত। মানুষ নিজের চেষ্টায় যেটা পারে না, রাষ্ট্র যদি সে নিরাপত্তা দেয় সেটাই সামাজিক সুরক্ষা। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে গড়ে উঠার জন্য এটির কোনো বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রায় বারো’শ জন পেনশন স্কিমের আওতায় এসেছেন।
তিনি বলেন, নাগরিকের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ১৮-৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক এই পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবে। তবে বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ নাগরিকগণ ১০ বছর নিরবচ্ছিন্ন জমা প্রদান করলে পেনশন সুবিধা পাবেন।কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার উদ্যোগে আয়োজিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয় অবহিত করণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চার ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি স্কিম, অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রয়েছে সমতা স্কিম।তিনি বলেন, প্রবাসীরা প্রবাস থেকে অনলাইনে পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তার নমিনির আইডি কার্ড ও ছবি দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সদস্য হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক তার অভিপ্রায় অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের শর্তে নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করলে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করাসহ প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন।
এছাড়া দেশে অবস্থানরত ১৮-৫০ বছর বয়সী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে পেনশন স্কিমের সদস্য হতে পারবেন। ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর গ্রাহক যত বছর বেঁচে থাকবেন তত বছর পেনশন পাবেন এবং ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার নমিনি ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন এবং ৬০ বছরের আগে মারা গেলে তার নমিনি মুনাফাসহ জমাকৃত টাকা ফেরত পাবেন। এছাড়াও জমাকৃত টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ লোন নিতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সব অনানুষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হলে চাঁদাদাতা আজীবন পেনশন ভোগ করবেন। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক নির্ধারিত চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি চৌদ্দগ্রামের সকল জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সহযোগিতা নিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কুমিল্লার অবস্থান সমুন্নত রাখতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা মিলনায়তনে মেয়র জিএম মীর হোসেন মীরুর সভাপতিত্বে সভায় কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।